তাদের দাবি জোরালো হচ্ছে।।সাক্ষর অভিযানও শুরু হচ্ছে। তাদের বক্তব্য ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের যুগান্তকারী ব্যক্তিত্ব তথা আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক 'নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু 'কে ভারতের মাটিতে উপস্থিত করার স্বপক্ষে প্রচার ,সমস্ত আন্তর্জাতিক বাধা,ষড়যন্ত্র ও দেশীয় মীরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতা কে ফুৎকারে উড়িয়ে তার বিশাল অভিযান চালানোর জন্যেই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে বালক ব্রহ্মচারীকে।। এই ষড়যন্ত্রের স্বরূপ এবার উন্মোচিত হওয়া দরকার।
প্রসঙ্গত ১৯৯৩ সালে এই রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের জমানায় অত্যন্ত রহস্যজনক পরিস্থিতিতে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ৮ এপ্রিল ভর্তি করা হয়েছিল ঠাকুর বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ কে। ৫ মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করেন। এরপর ৫৬ দিন ধরে তার দেহ রাখা ছিল সুখচর ধামে, তার আশ্রমে। তার প্রধান শীর্ষ ভক্ত অনুগামীরা সেই সময় জানিয়েছিলেন বাবা অর্থাৎ ঠাকুর বালক ব্রহ্মচারী মহারাজ নির্বিকল্প সমাধি অবস্থায় রয়েছেন। ১৯৯৩ সালের ৫ মে থেকে ২৯ শে জুন পর্যন্ত সুখচরধামে রাখা ছিল বালক ব্রহ্মচারীর তথাকথিত দেহ।। এরপর ৩০ জুন বামফ্রন্ট সরকারের তখনকার অন্যতম দক্ষ সংগঠক তথা ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সংগঠিত হয় অপারেশন সৎকার। কুখ্যাত এই অপারেশনে রাতের অন্ধকারে বিশাল পুলিশ বাহিনী লাঠি,গুলি, টিয়ার গ্যাস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এক আধ্যাত্মিক গুরু তথা সমাজ ও ধর্ম সংস্কারকের আশ্রমে। যেন কোন সশস্ত্র জঙ্গির গোপন ডেরায় অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে সেদিন ছিল বাম সরকারের ধামাধরা ক্যাডার বাহিনীও।। এসব ঘটনার ও আগে সুখচর ধামে রাখা বালক ব্রহ্মচারী মহারাজের দেহ সৎকারের জন্য বামফ্রন্ট সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে তোলা হয়েছিল গণ দাবী। সেই গণদাবি পত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন তখনকার যুব কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের একাংশ।। তাছাড়া বামফ্রন্টের নেতা ও তাদের সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা তো ছিলেনই । সেই গণদাবির ভিত্তিতেই চালানো হয়েছিল অপারেশন সৎকার। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সুখচর ধামে বালক ব্রহ্মচারীর আশ্রম থেকে ৫৬ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছিল তার তথাকথিত দেহ। ৩০ জুন সকাল সাতটা বেজে দশ মিনিটে আধ্যাত্মিক গুরুর প্রায় 7 কোটি শিষ্যের ও অনুগামীদের অনুপস্থিতিতে রতন বাবুর ঘাটে সরকারিভাবে সম্পন্ন হয় বালকের অন্তেষ্টি পর্ব। পরেরদিন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে সাধারণ মানুষ এবং বালক অনুগামীরা জানতে পারেন সেই রহস্যজনক অন্তেষ্টি পর্বের কথা।
এরপরেই কিন্তু ওঠে বিতর্কের ঝড়। তার কারণও ছিল। প্রথম কারণ কোঠারি হাসপাতালের ইস্যু করা ডেথ সার্টিফিকেট। কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি বামঘনিষ্ঠ সান্ধ্য দৈনিক পত্রিকায় সেই সময় লেখা হয়েছিল, ৮ এপ্রিল কোঠারি হাসপাতালের ইস্যু করা ডেথ সার্টিফিকেটের ভিত্তিতেই নাকি বামফ্রন্ট সরকার সুখচর ধামে অভিযান চালিয়ে অন্তেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন করে। এখানেই প্রশ্ন? আর তা হল বালক তাহলে মারা গেলেন কবে? ৮ এপ্রিল নাকি ৫ মে? সেই সময় রেডিও টেলিভিশন এমনকি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমেও এই বিষয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছিল তাতে বালক ব্রহ্মচারীর মৃত্যু ৫ মে ১৯৯৩ এ হয়েছিল বলে উল্লেখ করা আছে। আরো বলা হয়েছিল কোঠারি মেডিকেল সেন্টার থেকেই বালকের দেহ সুখচর ধামে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানে সেই দেহ ২৯ জুন পর্যন্ত রাখা ছিল। এরপর ২৯ জুন গভীর রাতে শুরু হয় অপারেশন সৎকার। যা শেষ হয় ৩০ জুন সকাল সাতটা বেজে দশ মিনিটে বালকের দেহ সৎকার হওয়ার পর। কিন্তু তাহলে ওই সান্ধ দৈনিক পত্রিকায় অন্যরকম কথা লেখা হলো কেন? কেনই বা সামনে চলে এলো বালকের মৃত্যুর তারিখ নিয়ে বিতর্ক?
অপারেশন সৎকার যিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেদিন সুখচর ধামে সম্পন্ন করিয়েছিলেন ,তিনি হলেন তৎকালীন সিপিএম নেতা নেপাল দেব ভট্টাচার্য? তারই নির্দেশে ৩০ জুন সকালে রতন বাবুর ঘাটে একমাত্র তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের সমর্থক বলে পরিচিত, ওই সান্ধ্য দৈনিকের আলোকচিত্রী ছাড়া অন্য কোন সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রী কে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাদের আটকে দেওয়া হয়েছিল শ্মশানের কলাপসিবল গেটেই। ওই দৈনিকটিতে একমাত্র প্রকাশিত হয়েছিল বালক ব্রহ্মচারী দেহ সৎকারের দাবি। যদিও তা ছিল বেশ দূরত্ব থেকে তোলা। যে ছবি এতদিন পর আবার ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রশ্ন উঠছে এই ছবি কার? তাকি বালক ব্রহ্মচারীর? নাকি লম্বা চুল ওয়ালা কোন অজ্ঞাত মহিলার?
চলবে.....
1 মন্তব্যসমূহ
Right step , this is absolutely necessary to understand the fact.
উত্তরমুছুনআপনাকে জানাই ধন্যবাদ